ঢাকায় ‘বেয়ারফুট ট্রেইল’: নগরবাসীর জন্য খালি পায়ে হাঁটার নতুন অভিজ্ঞতা
ঢাকায় ‘বেয়ারফুট ট্রেইল’: নগরবাসীর জন্য খালি পায়ে হাঁটার নতুন অভিজ্ঞতা
ঢাকা শহরে খালি পায়ে মাটিতে হাঁটার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। ব্যস্ত নগরে সেই অভাব পূরণ করতে মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান তৈরি করেছে দেশের প্রথম ‘বেয়ারফুট ট্রেইল’—যেখানে বালু, নুড়িপাথর, মাটি ও কাদার স্পর্শে হাঁটা যাবে একেবারে খালি পায়ে।
২০৮ একরজুড়ে বিস্তৃত এই বোটানিক্যাল গার্ডেন গোলাপবাগান, বাঁশবাগান, লেক, পদ্মপুকুর ও নানা বিরল উদ্ভিদের জন্য আগেই জনপ্রিয় ছিল। এবার সেখানে যোগ হলো ৬ ফুট চওড়া ও ৩৯০ ফুট দীর্ঘ এই বিশেষ হাঁটার পথ। ইটের গাঁথুনিতে বাঁধা রাস্তার দুপাশে রয়েছে বাঁশের বেষ্টনী, আর শুরুতেই দেখা মিলবে খালি পায়ে হাঁটার উপকারিতা ও সতর্কতাসংবলিত নির্দেশিকা বোর্ডের।
উদ্যানের পরিচালক শওকত ইমরান বলেন, “নগরজীবনে মানুষ প্রকৃতি থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। খালি পায়ে মাটিতে হাঁটা সেই সংযোগ ফিরিয়ে আনে। ঢাকা শহরে এমন অভিজ্ঞতা পাওয়ার সুযোগ না থাকায় মানুষ নিজেরা উদ্যোগও নিতে পারে না। তাই আমরা এই ট্রেইল তৈরি করেছি।”
প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে খোলা থাকা এই পথ সপ্তাহান্তে বিশেষ ভিড় জমায়। সকালবেলা হাঁটতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, এই ট্রেইল গ্রামবাংলার কাঁচা রাস্তার মতোই উঁচুনিচু অনুভূতি দেয়। ঢাকার ভেতরে দাঁড়িয়েই বালু, গাছের গুঁড়ি, পানি ও কাদার ওপর হাঁটার অভিজ্ঞতা মানুষকে যেন ছোটবেলায় ফেরত নিয়ে যায়। কেউ কেউ জানান, খালি পায়ে হাঁটা τους শরীরচর্চার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি পায়ে হাঁটলে পায়ের স্নায়ুপ্রান্ত উদ্দীপিত হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, মানসিক চাপ কমে। এটি প্রাকৃতিক আকুপ্রেশারের মতো কাজ করে এবং ‘আর্থিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহে ইলেকট্রন প্রবাহও বাড়ায়, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—সব বয়সী মানুষের জন্যই এটি উপকারী একটি ব্যায়াম।
খালি পায়ে হাঁটার নিয়মাবলি
জুতা খুলে ট্রেইলে নির্ধারিত পথ ধরে হাঁটতে হবে।
ব্যথা বা অস্বস্তি হলে বিরতি নেওয়ার পরামর্শ রয়েছে।
ছোট ও নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপে ১৫–২০ মিনিট হাঁটাই যথেষ্ট।
হাঁটা শেষে পা ধোয়ার জন্য পাশে পানির ব্যবস্থা আছে।
ডায়াবেটিস বা পায়ে সমস্যা থাকলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়।
যেভাবে যাবেন
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের প্রধান ফটকে প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা, ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ১৫ টাকা। প্রথম গোলাপবাগান পার হয়ে দ্বিতীয় গোলাপবাগানে পৌঁছালে দেখা মিলবে নির্দেশিকা ম্যাপের। ডান দিকে ‘যাত্রাবাড়ী’ নির্দেশনার পথে এগোলে সামনে পড়বে বেয়ারফুট ট্রেইল।
Comment / Reply From
You May Also Like
Popular Posts
Newsletter
Subscribe to our mailing list to get the new updates!